অভীক পুরকাইত,কলকাতা- যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনা অনেক বিষয়কে সামনে নিয়ে আসছে। হস্টেলে র্যাগিং প্রথা থেকে শুরু করে টবে গাঁজার চাষ—অনেকের মাথা ঘুরিয়ে দিচ্ছে। একটা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এমন ঘটনা বছরের পর বছর ঘটতে পারে সবার অলক্ষ্যে তা কেউ মানতে চাইছেন না। এমন পরিস্থিতিতে এবার সেনার পোশাকে ঢুকে পড়ল একদল যুবক–যুবতী। এরা আবার নাকি মানবাধিকার সংগঠনের সদস্য। এই নিয়ে পুলিশ তদন্তে নেমেছে। এখন জানা যাচ্ছে, এই সংগঠনের সঙ্গে জড়িত বিশিষ্ট আইনজীবী তথা সিপিএম নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। আর এমন তথ্য সামনে আসায় সুর সপ্তমে চড়িয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।এদিকে বুধবার সেনার পোশাকে হঠাৎ একদল যুবক–যুবতী ঢুকে পড়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। এমনকী নিজেদের ‘এশিয়ান হিউম্যান রাইটস সোসাইটির’ অংশ হিসাবেও দাবি করে তারা। বিশ্ব শান্তি সেনা বলে পরিচয় দেয়। যেখানে অশান্তি হয় সেখানে পৌঁছে যায় শান্তির বার্তা নিয়ে। এই সংগঠনের মাথা কাজি সাদেক হোসেন। তিনিই এশিয়ান হিউম্যান রাইটস সোসাইটির জেনারেল সেক্রেটারি। কিন্তু সেনার পোশাক পরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকা নিয়ে তৈরি হয় বিতর্ক। স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করেছে পুলিশ। যাদবপুর থানা থেকে তলব করা হয়েছে রেজিস্ট্রার ও ডিন অফ আর্টসকে। কাজি সাদেক হোসেনকেও তলব করা হয়েছে। এবার এই নিয়ে সুর চড়িয়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ।কেন সুর চড়াল তৃণমূল? তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দাবি, এশিয়ান হিউম্যান রাইটস সোসাইটির যে লেটার প্যাড রয়েছে তাতে চিফ প্যাট্রন এবং সেন্ট্রাল অ্যাডভাইজার হিসেবে নাম রয়েছে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের যাদবপুর ইউনিটের চেয়ারপার্সন সঞ্জীব প্রামানিক বলেন, ‘বুধবার এশিয়ান হিউম্যান রাইটস সোসাইটির পক্ষ থেকে যুবক–যুবতীর দল ভারতীয় সেনার নকল পোশাক পরে ক্যাম্পাসে ঢোকে। আমরা সূত্র মারফত ওই সংগঠনের প্যাড পেয়েছি। সেখানে চিফ অ্যাডভাইজার হিসাবে লেখা রয়েছে সিপিএম নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের নাম। বিকাশবাবু কী তাহলে আরএসএসের সঙ্গে যুক্ত? এসব বজরং দল, শান্তিরক্ষা বাহিনী তো বিজেপি করে। তাহলে কি বিজেপি আর সিপিএম যাদবপুরে আঁতাত করেছে? যে তদন্ত চলছে সেখানে যেন বিকাশবাবুকে জেরা করা হয়।’ঠিক কী বলছেন সিপিএম নেতা? এই নিয়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ সুর সপ্তমে চড়িয়েছে। কিন্তু তাতে গুরুত্ব দিতে নারাজ সিপিএম নেতা তথা আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। তাঁর কথায়, ‘আমি তো এই প্রথম জানলাম। প্যাডের কথাও প্রথম শুনলাম। এটা দেখে তো আমি নিজেই অবাক। আমার নাম ব্যবহার করে টাকা তুলছে, মানবাধিকার সংগঠনের লোক বলছে। আমি পাত্তা দিই না এসব ব্যাপারে। তবে এটার পিছনে চক্রান্ত আছে বলে আমার মনে হয়। আমি চাই তৃণমূল ছাত্র পরিষদ লালবাজার ধরে ব্যাপক তদন্ত করুক। তদন্ত রিপোর্টটা জনসমক্ষে দিক।’
কলকাতার যাদবপুর কাণ্ডে জড়াল বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের নাম, মাঠে নামলো তৃণমূল