ছবি সংগৃহীত

দেবব্রত সেনগুপ্ত, কলকাতা : আজ চিকিৎসক দিবস বিখ্যাত চিকিৎসক ডঃ বিধান চন্দ্র রায় স্মৃতিতে পরিপূর্ণ এই দিন। ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দের আজকের দিনে তার জন্ম হয়।

ছবি সংগৃহীত

এবং ১৯৬২সালের এই একই দিনে ঘটে তার মহাপ্রয়াণ। এই আশি বছরের জীবনকাল ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং ঘটনাবহুল। তার জন্ম হয়েছিল বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি পাটনা শহরে। শুরু থেকেই ছিল দারিদ্রতার সঙ্গে এক চূড়ান্ত লড়াই। আর ছিল আর্তের প্রতি সেবায় নিযুক্ত হওয়ার জন্য ডাক্তার হওয়ার এক অদম্য প্রয়াস। ডাক্তারি পড়ার স্বপ্ন সফল করতে হাসপাতালে মেল নার্স হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি, এমনকি চালিয়েছেন ট্যাক্সি। দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের সংস্পর্শে এসে তিনি ধীরে ধীরে যুক্ত হয়ে পড়েন রাজনীতির সঙ্গে। স্বাধীনতা সংগ্রামে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ করে কারাবরণ করেন তিনি।আবার নির্বাচিত প্রতিনিধি রূপে অলংকৃত করেন কলকাতার মেয়রের পদ। কিন্তু তার সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল স্বাধীন ভারতবর্ষের বুকে পশ্চিম বাংলার দ্বিতীয় মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে। চিকিৎসক হিসেবে তিনি আগাগোড়াই ছিলেন স্বনামধন্য। তার চিকিৎসায় রোগ নিরাময় হয়েছে সাধারণ ব্যক্তি থেকে আরম্ভ করে একাধিক দিকপাল মানুষের। স্বয়ং কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ছিলেন তার চিকিৎসাধীন। চিকিৎসক হিসেবে কিংবদন্তি খ্যাতি আছে তাঁর। সেই সঙ্গে আছে অজস্র স্মৃতি জড়িত ঘটনা যা আজও মানুষের মুখে মুখে ফেরে। জনশ্রুতি শুধু তার চিকিৎসক হিসেবে খ্যাতি নিয়েই নয়, জনশ্রুতি আছে তাঁর প্রেম নিয়েও। যদিও তার কোনো নির্দিষ্ট প্রমাণ নেই। কথিত আছে তখনকার সময়ে এক বিখ্যাত চিকিৎসক ডঃ নীলরতন সরকারের কনিষ্ঠা কন্যা কল্যাণীর পাণিপ্রার্থী হন তিনি। তখন নাকি তার রোজগার মাসে মাত্র পাঁচ টাকা। তিনি দরিদ্র মানুষের সেবায় অত্যন্ত কম পারিশ্রমিক নিয়ে রোগী দেখতেন সেই সময়। সেই অর্থাভাব হয়ে দাঁড়ালো প্রনয়ের কাটা। শোনা যায় ডঃ সরকার দারিদ্রতার জন্য এই প্রস্তাব খারিজ করে দেন এই তরুণ ডাক্তারের। জনশ্রুতি অনুসারে ডঃ বিধান চন্দ্র রায় চিরকালই কল্যাণী কে মনে রেখেছেন এবং থেকেছেন অকৃতদার। অনেকেই মনে করেন পুরনো স্মৃতিকে মনে রেখেই ডঃ বিধান চন্দ্র রায় তাঁর স্বপ্নের শহরের নাম দেন কল্যাণী।

ছবি সংগৃহীত

কলকাতা থেকে পঞ্চাশ কিলোমিটার দূরে আজও সেই প্রেমের বার্তা বুকে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে সেই স্বপ্নের শহর কল্যাণী।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

three × 4 =