রাজ্যে একের পর এক আর্থিক প্রতারণায় গ্রেফতার হচ্ছে রাজ্যের মন্ত্রী তথা অভিনেতা -অভিনেত্রী থেকে ব্যবসায়ি সকলেই। সেইরূপ আর্থিক প্রতারণা মামলায় বুধবার সাংবাদিক সম্মেলন ডেকেছিলেন অভিনেত্রী তথা সাংসদ নুসরত জাহান । নুসরত দাবি করেন, সেভেন সেন্সেস ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রাইভেট লিমিটেড থেকে ১ কোটি ১৬ লাখ ৩০ হাজার ২৮৫ টাকা তিনি লোন নিয়েছিলেন। ২০১৭ সালের ৬ মে সুদ সমেত ১ কোটি ৪০ লাখ ৭১ হাজার ৯৯৫ টাকা ফেরতও দেন। ২০১৭-র ১ লা মে তিনি ওই সংস্থার ডিরেক্টর পদ থেকে পদত্যাগ করেন বলে জানান নুসরত।
এদিকে এই লোনের কাণ্ড শুনে রীতিমতো অবাক হয়ে যান সেভেন সেন্সেস ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রাইভেট লিমিটেডের ডিরেক্টর রাকেশ সিং। ফ্ল্যাট প্রতারণার অভিযোগের প্রেক্ষিতে বুধবার নুসরত জাহান যা দাবি করেন, তার ঠিক উল্টো সুর রাকেশ সিং এর গলায়। নুসরতের সোজা দাবি, সেভেন সেন্সেস ইনফ্রাস্ট্রাকচারের থেকেই ঋণ নিয়ে ফ্ল্যাট কিনেছিলেন অভিনেত্রী।অন্যদিকে প্রথম সারির এক সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, ডিরেক্টর রাকেশবাবুর দাবি তার সংস্থার থেকে কোনও ঋণই নেননি নুসরত। অন্য একটি সংস্থার থেকে সাংসদ ঋণ নিয়েছিলেন বলেও দাবি করেন রাকেশ সিং। শুধু তাই নয় নুসরতের দাবি শুনে তিনি রীতিমতো হকচকিয়ে গিয়েছেন বলেই জানান সংবাদ মাধ্যমকে ।সংশ্লিষ্ট সংবাদমাধ্যমের কাছে সাক্ষাতে সেভেন সেন্সেসের ডিরেক্টর জানান তার সংস্থার তরফে কোনও ঋণ দেওয়া হয়নি নুসরতকে। রাকেশবাবুর দাবি অন্য সংস্থার থেকে অভিনেত্রী ঋণ নিয়েছিলেন। প্রসঙ্গত জানা যায়, মেসার্স সেভেন সেন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি সংস্থার সঙ্গে কো অপারেটিভ ভাবে ফ্ল্যাট কেনার চুক্তি হয়েছিল কয়েকজনের। ওই সংস্থার ডিরেক্টর ছিলেন তৃণমূল সাংসদ-অভিনেত্রী নুসরত জাহান।অভিযোগ উঠেছে, প্রায় ২৪ কোটি টাকা ভাগাভাগি হয়েছে সংস্থার ডিরেক্টরদের মধ্যে, যাদের মধ্যে অন্যতম নাম নুসরত জাহান। তিনি যে অভিযুক্ত সংস্থার অন্যতম ডিরেক্টর ছিলেন তা বারে বারে দাবি করেছেন অভিযোগকারীরা। প্রতারিত বিনিয়োগকারীরা আদালতের দ্বারস্থ হন। আদালতের নির্দেশে শুরু হয় পুলিশি তদন্ত।
এরই মধ্যে ফ্ল্যাট ‘প্রতারণার’ অভিযোগ জানাতে কয়েকজন প্রবীণ নাগরিককে নিয়ে ইডির দ্বারস্থ হন বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পণ্ডা। বিষয়টিতে আর্থিক কারচুপি হয়েছে বলে তদন্তের দাবি জানান নেতা। এরপরই এই নিয়ে শোরগোল পড়ে যায় গোটা রাজ্যে।বুধবার সাংবাদিক সম্মেলনে নুসরত জানান, তিনি সেই সময়ে সংস্থার ডিরেক্টর ছিলেন। তবে ৫ বছর আগেই তিনি সংস্থা থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। সংস্থা থেকে নেওয়া ঋণের টাকাও সুদসহ ফেরত দেন বলে দাবি অভিনেত্রীর। সেইসঙ্গে ‘৩০০ শতাংশ গ্যারান্টি’ দিয়ে বলেন যে তিনি কোনওরকম দুর্নীতিতে যুক্ত নন। যদি নুসরত এই মন্তব্য করেন তাহলে রাকেশ সিং এর করা মতামত কি যুক্তিহীন সেটাই দেখতে চায় রাজ্যবাসী।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

seventeen + thirteen =